সাইকেল
প্রায় ১ বছর আগে থেকেই ভার্সিটির বেশ কয়েকজন বলছিল সাইকেল কিনতে। বিশেষ করে ইয়াসিন।
কিন্তু সাইকেলে করে ৫-৬ কিলোমিটার দূরের ভার্সিটিতে যাবো এ কথা ভাবতেই পারতাম না। মনে হত মাঝরাস্তায় মাথা ঘুরায় পড়ে যাবো।
মেইন রোডে আগে কখনো চালাই নি। খুব ভালো যে চালাতে পারি সেটাও না। আমার ধারণা ছিল, রানওয়ে ছাড়া আমি মনে হয় সাইকেল চালাতে পারবো না।
ভাইয়া সাইকেল কেনার প্রায় ১০-১১ মাস পরেও আমি সাইকেলে একটা টেস্ট রাইড দিয়ে দেখি নাই।
যখন নিয়মিত কলাবাগান যাওয়া আসা করা লাগলো, তখন দেখি প্রতিদিন ১৬০-১৭০ টাকা লাগে শুধু রিকশা ভাড়া। বাসে করে যেতে হলেও সমস্যা। সরাসরি বাস রুট নেই।
একদিন আনোয়ারকে বললাম তার পুরনো সাইকেল নিয়ে আসতে। বেল, ব্রেকহীন সেই সাইকেল দিয়ে নির্জন রাস্তায় ১৫-২০ মিনিট ঘুরাঘুরি করে দেখলাম, চালাতে পারছি।
এরপরদিন ভাইয়ার সাইকেল নিয়ে একদম ভোরে বের হলাম। দেখি খুব একটা সমস্যা হচ্ছে না। তারপর আরও একদিন গেলাম। মেইন রোডে চালাতে ভয় লাগে। অনেকটা ভাগ্যের উপর ছেড়ে দিয়ে হরতালে ২ দিন চালিয়ে দেখলাম। এরপর কিনে ফেললাম একটা সাইকেল। যদিও নিজের সেই সাইকেল চালিয়েছি আরও ১৫-১৬ দিন পর!
রোড বাইকে অভ্যস্ত না হওয়ায় সেটা নিয়ে রাস্তায় নামি নাই। ভাইয়ার সাইকেলই চালাই। এর মধ্যে রাস্তার ২-৪ জন পথচারীকে অল্পস্বল্প গুঁতা দিয়েছি।
মোটামুটি ১ সপ্তাহ চালানোর পর ভয় কাটছে। বিপদজনক মোড় গুলো অনেক সময় নিয়ে পার হই।
ভাইয়ার সাথে উত্তরা, বন্ধুদের সাথে হাতিরঝিল, বংশাল, টিএসসি, নীলক্ষেত ঘুরে তাদের দেখে দেখে অনেক কিছু শিখলাম। ঢাকার রাস্তায় সাইকেল চালানোর ভয় কাটাতে এটা অনেক ভাল একটা উপায়। অভিজ্ঞ কাউকে ফলো করে চালানো।
একা একা চালাতে গেলে সামনে কোন সাইক্লিস্ট থাকলে তার দিকে খেয়াল রাখি। কীভাবে সাইড দেন, সাইড নেন, সিগন্যাল দেন।
প্রথম প্রথম গ্লাভস, হেলমেট পড়ে সাইকেল চালাতে শরম লাগতো। মানুষ কী মনে করবে, হাসাহাসি করবে কীনা, এই সব ভাবতাম। ২ দিন যেতে না যেতেই সেটা হাওয়া। এখন এই সব গিয়ার পড়ে সাইকেল চালাতেই বেশি ভাল লাগে। বাসা থেকে অফিসের দূরত্ব প্রায় ৬ কিলোমিটার। যেতে লাগে ৩০ মিনিটের কম। টি শার্ট পড়ে সাইকেল চালিয়ে অফিসে গিয়ে অন্য একটা জামা পড়ে নিলেই হয়। এই কাজটাও প্রথম ২-৩ দিন বিরক্ত লাগতে পারে। এরপর, কোন ব্যাপারই না।
Posted on November 19, 2013, in ভাবনার মেঘ, রাস্তা-ঘাট. Bookmark the permalink. Leave a comment.
Leave a comment
Comments 0